পারিবারিক ডাক্তারের চেম্বার থেকে ফেরে কণা। রিপোর্ট হাতে নিজেদের রুমে ঢুকে দেখে, শাহেদ খবরের কাগজ পড়ছে।
নিরবে শাহেদের দিকে বাড়িয়ে দেয় রিপোর্ট কার্ড। শাহেদ হাতে নেয়। খবরের কাগজ নিচে অলস পড়ে রয়। মনযোগ দিয়ে পড়ে। শেষ হতেই একজন বাবা কণার দিকে তাকায়। আনন্দে উদ্বেলিত এক বাবার চোখ কেমন হয়? এমনই কি? শাহেদের এই মুহুর্তের মত?
মা-বাবার আনন্দঘন সময় কাটে এক মায়াবী বিকেলে। প্রহরগুলি কেটে যায় দুরন্ত বাতাসের দোলায়।
সন্ধ্যা নামে। শাহেদ কোথাও যেতে রেডি হয়েছে। কণা কাছে আসে। ওর ডান হাত শাহেদ আলতো ছুঁয়ে কাছে টানে। কপালের ওপর অধর ছুঁয়ে দেয় শাহেদ। বলে, 'আসি।' বিদায় চুম্বন?
কণা হেসে বলে, 'এমন ভাবে বলছ যেন আর আসছ-ই না।' হাসে শাহেদ। তাকায় কণা। শাহেদের চোখে হাসি নেই। ও দু'টো রঙ পরিবর্তন করেছে। সম্পুর্ণ অন্য এক ভিন্ন চোখে তাকায় শাহেদ। কণার সম্পুর্ণ অচেনা লাগে ওকে। ধীরে ধীরে তখন শাহেদ বলে চলেছে, 'হ্যা ক্ণা! আমি চলে যাচ্ছি। তোমার সাথে আমার পথ এ পর্যন্তই ছিল।'
কোনো অনুতাপ নেই। নেই কোনো বিষন্নবোধ। সম্পুর্ণ নির্বিকার থেকে কণার দিকে পিছন ফিরে শাহেদ। দরজা সেদিকে।
'দাঁড়াও!' কণার ডাকে শাহেদ থামে। পেছন ফেরে। কণা নিজের গর্ভে হাত দিয়ে জিজ্ঞেস করে, 'এর কি হবে?' শাহেদ চুপ থাকে। ওর ভিতরে কি ভাংগাচূরা চলে? 'আমাকে পাঠানো হয়েছিল 'আমাদের প্রতিনিধি তোমাদের পৃথিবীতে রেখে যাবার জন্য।' এটুকু বলে একটু থামে শাহেদ। কণার চোখে তাকিয়ে বাকিটুকু বলে, ' আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি কেবল, তোমার সাথে কোনো ধরণের বন্ডেজ নেই আমার।'
কণার হতবিহবল ভাবটা কাটতে চায় না। ও জিজ্ঞেস করে, ওর সামনে দাঁড়ানো সম্পুর্ণ অন্য এক মানুষকে, 'কে তুমি? আমার মানুষটি কোথায়?' 'তোমার মানুষটি আর নেই। তোমার জন্য দু:খপ্রকাশ করলে তোমার মানুষটি যদি ফিরে আসত, অবশ্যই করতাম আমি। কিন্তু তা হবার নয়।'
দরজার চৌকাঠ ধরে একটু থামে। শাহেদের অনুরুপ নিয়ে যে মানুষটি চলে যেতে চাচ্ছে, কণাকে ছেড়ে, সে ম্লান হেসে জানায়, ' আমি আমার কাজ সম্পুর্ণ করিনি। তোমার মানুষটির স্পার্ম-ই তোমার গর্ভে। সে তোমার সন্তানের বাবা। তার মৃত্যুর পুর্বেই আমি সংরক্ষন করেছি। বাবুটার যত্ন কর। ও তোমাদের বাবু। আমাদের জগত জানবে সে আমাদের মানুষ। এটাই তোমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করার একমাত্র পথ ছিল।'
দরজা খুলে অচেনা মানুষটি বাইরে পা বাড়ায়। কণা নিরবে সামনে আগায়। দরজা ধরে শেষ প্রশ্ন করে, 'তুমি কে?'
দূরে চলে যেতে যেতে, দূরের কোনো পৃথিবীর অবাক করা মানুষটি, পেছন না ফিরে জানায়,' আমি পর পুরুষ!'
রাতের অন্ধকার ছুঁয়ে ছুঁয়ে, একজন অচেনা মানুষের ফিরে যাবার ক্লান্ত পদধ্বনি, নিমিষে মিলায় বাউরি বাতাসে। সব চুপচাপ। চারিধার। এক নিশ্চুপ। মাঝরাত।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
কাজী জাহাঙ্গীর
মামুন ভাই ছোট হলেও গল্পে টুইস্ট আছে। মাঝপথে এসে খানিকটা চমকে যাওয়ার মত হল। ভাগ্যভাল স্পার্ম এর বিষয়টা পরিস্কার করেছেন,খুব অপমান বোধ করছিলাম, বাঁচালেন। শুভেচ্ছা আর আমার সংরক্ষণ করা ভোটটা দিয়ে আমার গল্প ও কবিতায় আসার আমন্ত্রণ জানিয়ে গেলাম হা হা হা।
শেহজাদ আমান
"তোমার মানুষটির স্পার্ম-ই তোমার গর্ভে। সে তোমার সন্তানের বাবা। তার মৃত্যুর পুর্বেই আমি সংরক্ষন করেছি। বাবুটার যত্ন কর। ও তোমাদের বাবু। আমাদের জগত জানবে সে আমাদের মানুষ। এটাই তোমাদের অস্তিত্ব রক্ষা করার একমাত্র পথ ছিল।' --এখানে আসল ব্যাপার কি, সেটা কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছে না। আমার মনে হয় গল্পে বিষয়গুলো আরো পরিস্কার করা উচিত ছিল।
সমাধিরঞ্জন
এরকম বিষয়ের ওপরে হাত দেওয়াটা সবার ধৃষ্টতায় কুলোয় না। খুব সহজ সরল ভাবে, বিজ্ঞানের অভ্যন্তরে না গিয়ে সুন্দর কাহিনী, ক্লোন নিয়ে যত গল্প লেখা হয়েছে, এটি অবশ্যই আলাদা। এর ওপর লেখার সাহস আমার ছিলনা, প্রচুর rationality, logic দরকার। তবুও ছেলের এক আইডিয়ায় হাত দিয়েছিলাম। বেশ কয়েকবার Gravity, Interstellar দেখলাম। পড়লাম Stephen Hawkings (Science background তো ছিলই)। ব্যস ঝাঁপ দিয়ে দিলাম।
এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।
প্রতি মাসেই পুরস্কার
বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।
লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন
প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার
প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।